নিজস্ব প্রতিবেদক :: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক রাজ্যে ভরদুপুরে দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায়।
পুলিশ বলেছে, শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় বাফেলোর জিনার স্ট্রিটে (ইস্ট ফেরি স্ট্রিট ও বেইলি অ্যাভিনিউ কর্নারে) এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এক প্রবাসী বাংলাদেশির বাড়িতে সংস্কারকাজ করার সময় তাদের হত্যা করা হয়। নিহতরা হলেন- কানাইঘাট উপজেলার ইউসুফ জনি (৪৫) এবং কুমিল্লার বাবুল (৪৩)।
বাফেলোতে বসবাসরত কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ও সাংবাদিক মতিউর রহমান লিটু জানান, গুলিতে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান অন্যজন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডব্লিউজিআরজেড জানায়, গুলির ঘটনার পর একটি সোয়াট টিমকে ঘটনাস্থলে ডাকা হয়। স্থানীয়দের বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার আহ্বান জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
এর আগে, শুক্রবার রাতে বাফেলোর ইয়ং স্ট্রিটের ফার্স্ট ব্লকে ৩১ বছর বয়সী এক তরুণকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার দেহে একাধিক গুলির ক্ষত পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার বাফেলো পুলিশের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট টিম পুরো এলাকা ঘেরাও করে রাখে। পরপর এমন ঘটনায় কানাডা সীমান্ত সংলগ্ন বাফেলোতে বসবাসরত অর্ধ লক্ষাধিক প্রবাসীর মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, ঘটনার দিন দুপুরে সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেপ্তার করার খবর ছড়িয়ে পড়লেও রাতে তা অস্বীকার করা হয়। এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে জানা গেছে।
বাফেলোর স্টপ দ্য ভায়োলেন্স কোয়ালিশন এর নির্বাহী পরিচালক মুরে হোলম্যান স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, বাফেলো সিটিতে বসবাসরতরা শান্তিপ্রিয় এবং কখনো কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। এমন অবস্থায় কঠোর পরিশ্রমী হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশিরা আক্রান্ত হলেন- এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার।
স্থানীয় কমিউনিটি লিডার আবুল বাশার এবং সাংবাদিক মতিউর রহমান লিটু জানান, তারা ৯৯৫ ফিলমোর অ্যাভিনিউতে জড়ো হয়ে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ এবং দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাবেন।
নিহত ইউসুফের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১০ মাস পূর্বে স্ত্রী এবং দুই মেয়ে শিশুকে নিয়ে স্থায়ী বসবাসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান ইউসুফ জনি। সেখানে একটি পেইন্টিং কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন তিনি। তার পরিবারের সদস্যরা সিলেট নগরীর মেজরটিলায় বসবাস করছেন। ইউসুফ জনির মৃত্যুর সংবাদ প্রথমে তার পরিবারের কাছে জানান যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত কানাইঘাটের দুলাল আহমদ।
তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় ছেলে ইউসুফ জনির মর্মান্তিক মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে পিতা-মাতাসহ পরিবারের লোকজন বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন। নিহতের সিলেট শহরের বাসায় চলছে শোকের মাতম। নিহত দুজনের লাশ নিইউয়র্ক পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
Leave a Reply