সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত‍্যার দায়ে স্বামীকে আমৃত‍্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এই রায় দেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ঝলক রায়। একই সাথে দণ্ডিতকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্ত ইকবাল মিয়া উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের উস্তেগেরগাঁও গ্রামের রমজান আলীর ছেলে।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৩ জুন দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের কিরনপাড়া গ্রামস্থ ভোলাখালি নদীর দক্ষিণ পাশের জঙ্গলে মনোয়ারা বেগম নামে এক গৃহবধূকে খুন করে মরদেহ ফেলে দেয় কে বা কারা। এ ঘটনায় নিহতের মা আমেনা খাতুন বাদী হয়ে ১৭ জুন দোয়ারাবাজার থানায় একটি মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর ছায়া তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তের এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের সাথে নিহতের স্বামী ইকবাল মিয়ার সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ।

জানা যায়, ঘটনার চার বছর আগে উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের করিনপাড়া গ্রামের ময়না মিয়ার মেয়ে মনোয়ারা বেগমের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন একই ইউনিয়নের উস্তেগেরগাঁও গ্রামের রমজান আলীর ছেলে ইকবাল মিয়া। বিয়ের পর থেকে দাম্পত্য জীবন ভালো চললেও কোনো এক ঘটনায় জেলে যেতে হয় স্বামী ইকবাল মিয়াকে। জেল থেকে বের হয়ে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের সাথে দ্বন্দ্ব বাঁধে ইকবালের। এর জেরে স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে শ্বশুরবাড়ি এলাকার ভোলাখালি নদীর দক্ষিণের জঙ্গলে নিয়ে হত্যা করে গা ঢাকা দেন স্বামী ইকবাল। এ ঘটনায় ইকবালকে অভিযুক্ত করে ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বরে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. আল মামুন।

দীর্ঘদিন এই মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে বৃহস্পতিবার ৩০২ ধারা মোতাবেক দোষী সাব‍্যস্ত হলে ইকবাল মিয়াকে স্ত্রী হত্যার দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার রায় প্রদান করেন বিজ্ঞ বিচারক।
এই রায়ে সন্তুষ্ট রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি সুহেল আহমদ ছইল বলেন, রায়ে সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তবে রায়ে অসন্তোষ জানিয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন বিবাদী পক্ষের আইনজীবী রমজান আলী।