মাধবপুর প্রতিনিধি :: হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সুরমা চা-বাগানের ১০ নম্বর এলাকায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেতুটি নির্মাণকাজের পাইলিং এরই মধ্যে শেষ হলেও লাগানো হয়নি সাইনবোর্ড। রড, সিমেন্ট, বালু, পাথর স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে টেস্ট করে মান নির্ণয়ের পর রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর কাজ শুরু করার নিয়ম থাকলেও তা মানেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দৃশ্যমান সাইনবোর্ড লাগানোর নিয়ম থাকলেও তাও লাগাননি সংশ্লিষ্টরা।

এলজিইডি অফিস সুত্রে জানা যায়, মাধবপুর উপজেলার সুরমা চা-বাগানের ১০নং এলাকায় একটি খালের উপর সেতু নির্মাণের জন্য এলজিইডি কর্তৃপক্ষ টেন্ডার আহ্বান করলে কাজ পায় হাসান এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। জানা গেছে, সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সেতুর পাইলিংয়ের কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এসব কাজে নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু নির্মাণকাজে সিলিকা বালু ব্যবহারের কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও এলজিইডি কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সেতুর নিচে খালের বালু দিয়ে কাজ করছেন। তাছাড়া ৬০ গ্রেড রড ব্যবহার করার কথা থাকলেও সেতু নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ৫০ গ্রেড রড। সেতুর নির্মাণকাজ পরিদর্শন করে দেখা যায়, সেখানে যে পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে তা নিম্নমানের। ময়লা আর ছোট ছোট পাথর ফেলে রাখা হয়েছে সেখানে।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা সৈয়দ রাজীব (রুবেল) নামে একজনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তারা সিলিকা বালু দিয়েই কাজ করছেন। কাজের শুরুতে সাইনবোর্ড লাগানো হয়নি কেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সাইনবোর্ড লাগানো হয়নি তাতে কী হয়েছে? লাগানো হবে। তবে ৬০ গ্রেড রডের পরিবর্তে ৫০ গ্রেড রড ব্যবহার করার প্রশ্নে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

এ ব্যাপারে হাসান এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কেউ কল রিসিভ করেননি।

মাধবপুর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মো. নজরুল ইসলাম জানান, প্রায় ২ কোটি ৫৪ লাখ ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতু নির্মাণকাজের শুরুতে সাইনবোর্ড লাগানোর নিয়ম আছে। শিগগির সাইনবোর্ড লাগানো হবে।

বালু ও রডের ব্যবহারে অনিয়মের ব্যাপারে তিনি বলেন, সেতু নির্মাণকাজে নিয়ম মেনে সিলিকা বালু ব্যবহার করা হয়েছে। তবে কিছু লোকাল বালুর ব্যবহারও হয়েছে। রডের গায়ে যে লেখা আছে ৫০ গ্রেড, সেটা যদি আমরা কনভার্ট করি তাহলে ঠিক আছে।
হবিগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদুল ইসলাম জানান, সাইনবোর্ড লাগানো হয়নি, তবে লাগানো হবে। বালু, রড ও পাথর ল্যাবে পরীক্ষা করে লাগানো হয়েছে।

ল্যাবের রিপোর্টগুলো মাধবপুর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলামের কাছে নেই জানানো হলে রিপোর্টগুলো নিজের কাছে রয়েছে বলে জানান হবিগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদুল ইসলাম। মাধবপুর উপজেলার প্রকৌশলী তার কাছ থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করতে পারেন বলেও জানান তিনি।