কানাইঘাট প্রতিনিধি :: সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক আলমগীর হোসেনের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে আগামী রবিবার থেকে কানাইঘাটে লাগাতার পরিবহন ধর্মঘটের ডাকার হুমকি দিয়েছেন উপজেলা যৌথ পরিবহন সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ।

সোমবার বিকেল ৪টায় কানাইঘাট প্রেসক্লাব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

উপজেলা যৌথ পরিবহন সংগ্রাম পরিষদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে শ্রমিক নেতা জুনেদ হাসান জীবান বলেন, গত ৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গাছবাড়ী বাজার পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে মোটরসাইকেলের সাথে অটোরিকশার ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে অটোরিকশার চালক আলমগীর হোসেনকে ঘটনাস্থলেই নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ড ঘটান নিজ দলইকান্দি আকুনি গ্রামের মৃত শাহাব উদ্দিনের ছেলে সাদিক আহমদ (বাবলু), তার ভাই কয়েছ আহমদ, তাদের চাচাতো ভাই সুলতান ও সহযোগী মাহফুজ আহমদসহ আরও কয়েকজন। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে পরিবহন শ্রমিক ও গাছবাড়ী এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ ধারাবাহিকভাবে মানববন্ধন, সভা, সমাবেশ করেছেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ঘটনার সাথে জড়িত সাদিক, কয়েছ, মাহফুজসহ তাদের সহযোগীদের রহস্যজনক কারণে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। যার কারণে সর্বস্তরের পরিবহন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, শ্রমিক এবং এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, আগামী শনিবারের মধ্যে পুলিশ প্রশাসন হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থ হলে রবিবার থেকে কানাইঘাট উপজেলা যৌথ পরিবহন সংগ্রাম পরিষদ অনির্দিষ্টকালের জন্য উপজেলায় পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেবে। এছাড়া থানা থেকে হত্যা মামলার তদন্তভার পরিবর্তন করা হলে পরিবহন শ্রমিকদের পক্ষ থেকে কঠোর কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, অটোরিকশার চালক আলমগীর হোসেনের হত্যাকারী সাদিক ও তার ভাই কয়েছের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন থেকে গাছবাড়ীসহ কানাইঘাটের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী ও অপরাধ চক্র গড়ে তোলে রাস্তাঘাটে পরিবহন থেকে মালামাল লুটপাট, লোকজনদের তুলে নিয়ে মারধর করে মুক্তিপণ আদায়, মহিলাদের অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে মোটা অংকের টাকা আদায়, লোকজনকে তুলে নিয়ে মারধর করে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়াসহ পুলিশের ওপর হামলা এবং গাছবাড়ী এলাকায় জনমনে ভীতির সৃষ্টি করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছে। এমনকি মদ, ইয়াবাসহ নেশাজাত দ্রব্য বিক্রিসহ পূর্বে আরও কয়েকজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করার মতো ঘটনার সাথে জড়িত থাকলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ এই চক্রটি অটোরিকশার চালক আলমগীর হোসেনকে নির্মমভাবে হত্যা করার মতো সাহস পেয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা যৌথ পরিবহন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক শ্রমিকনেতা আতাউর রহমান, গাছবাড়ী উপ-পরিষদ ৭০৭ এর সাবেক সভাপতি জামাল আহমদ, শ্রমিকনেতা খসরুজ্জামান, কয়ছর আহমদ, আনোয়ার হোসেন, আফতাব উদ্দিন, জয়নাল আবেদীন, আলমাছ উদ্দিন, সালেহ আহমদ, বদরুল ইসলাম ও নাজিম উদ্দিন। এছাড়া অর্ধশতাধিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।