নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটে আলোচিত আরিফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ নিপুকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে সোমবার সকালে নিপু আত্মসমর্পণ করলে বিচারক কিউ. এম নাছির উদ্দীন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশ পেয়ে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। নিপু এতদিন উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন।

সিলেট নগরীর টিবি গেট এলাকায় ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর রাত ১২টার দিকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন আরিফ। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর রাত দেড়টার দিকে মারা যান তিনি।

প্রাণ হারানো আরিফ নগরীর টিবি গেট এলাকার ফটিক মিয়ার ছেলে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম গ্রুপের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। আরিফের বাবা ফটিক মিয়া অটোরিকশা চালান। তবে অসুস্থ থাকায় এখন বেকার। মা আঁখি বেগম বালুচর এলাকার রাজা মিয়ার কলোনিতে বাড়িতে বাড়িতে রান্নাবান্নার কাজ করে বর্তমানে সংসার চালাচ্ছেন।

আরিফকে কুপিয়ে ফেলে যাওয়ার সময় দৌড়ে সেখানে গিয়েছিলেন মা আঁখি বেগম। সে সময় তিনি সংবাদকর্মীদের বলেছিলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমি সেখানে গিয়ে দেখেছি, সাদা পাঞ্জাবি পরে হিরণ মাহমুদ নিপু মোটরসাইকেলে উঠে চলে যাচ্ছেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় আমি ছেলেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় নিয়ে হাসপাতালের পথে রওনা হই। যাওয়ার পথে ছেলে আমাকে বলে- হিরণ মাহমুদ, রনি, মামুন, হেলালসহ ১৫-২০ জন মিলে আমার ওপর হামলা চালিয়েছে।’

সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হিরণ মাহমুদ নিপু গত বছর অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বেই আরিফকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয়েছে বলে দাবি আরিফের পরিবারের।

আরিফ হত্যার পর গত বছরের ২২ নভেম্বর আঁখি বেগম বাদী হয়ে সিলেটের এয়ারপোর্ট থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় হিরণ মাহমুদসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও পাঁচজনকে। মামলার আগে ও পরে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিরা অধরা ছিলেন।

গত বছরের ২৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ হিরণ মাহমুদ নিপুকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়ে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।