মহসিন রনি :শব্দ দূষনের মতো নীরব ঘাতকের কবলে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সিলেট শহরের কয়েক লাখ বাসিন্দার ।যেখানে হাসপাতাল থেকে শুরু করে স্কুল গুলোর আশেপাশে বিকট পরিমানে শব্দ দুষনের ফলে জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে সকল শ্রেনী পেশার মানুষের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে,মানুষের কান ৭০ ডেসিবল পর্যন্ত শব্দ সহ্য করতে পারে তবে সিলেট নগরীতে শ্রবণশক্তির তুলনায় বেশি শব্দ দুষণের ফলে দিন দিন অতিষ্ঠ হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। শব্দদূষণের কারণে দুশ্চিন্তা, উগ্রতা, উচ্চ রক্তচাপ, টিন্নিটাস, শ্রবণশক্তি হ্রাস, ঘুমের ব্যাঘাতসহ অন্যান্য ক্ষতিকর সমস্যা ঘটার সম্ভাবনা যেখানে প্রকট সেখানে প্রতিদিনই এই শব্দ দুষণের মতো নীরব ঘাতকের সাথে লড়াই করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের।
সিলেট নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিন সড়কে যানজটের ফলে কারণে অকারণে ট্রাফিক আইন না মেনেই অযথা হর্ণ বাজানোর ফলে মাত্রাতিরিক্ত শব্দ দুষণ হয় যা সাধারণ মানুষের শ্রবণশক্তির তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। বিশেষ করে সিলেট নগরীর আম্বরখানা,জিন্দাবাজার, সোবাহানীঘাট, ধোপাদিঘি, রিকাবিবাজার,বন্দরবাজার সহ উল্লেখযোগ্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়কে শব্দ দুষণ দিগুণ হয় অন্যান্য জায়গার তুলনায়। যেখানে রয়েছে সিলেট শহরের সুনামধন্য বেশ কয়েকটি হাসপাতাল সহ বিদ্যালয় যার ফলে শব্দ দুষণের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী এবং হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা।
সুশীল সমাজ ও স্বাস্থ্য সচেতনদের মতে ট্রাফিক আইন মেনে চললে এবং অযথা হর্ণ বাজানো বাদ দেয়া গেলে নগরীতে শব্দ দুষণের মাত্রা কমে আসবে। এ বিষয়ে ব্যাংকার সাহেদ আহমদ বলেন, শহরে প্রতিদিন যে হারে যানজটের সৃষ্টি হয় উচ্চ মাত্রায় হর্ণের আওয়াজে আমরা সবাই অতিষ্ঠ এটা যদি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা যায় তাহলে আশা করি শব্দ দুষণের মাত্রা অনেকটা কমে আসবে।
চিকিৎসকদের মতে অতিরিক্ত শব্দ দুষণের ফলে শারিরীক নানা সমস্যা সহ মানসিক ভাবে খিটখিটে মেজাজের হয়ে যান একজন ব্যক্তি।এ বিষয়ে নর্থ ইষ্ট মেডিকেল হাসপাতালের প্রাক্তন মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আব্দুস সালাম মুক্তা বলেন, শব্দদূষণের কারণে দুশ্চিন্তা, উগ্রতা, উচ্চ রক্তচাপ, টিন্নিটাস, শ্রবণশক্তি হ্রাস, ঘুমের ব্যাঘাতসহ অন্যান্য ক্ষতিকর সমস্যা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। বর্তমানে নগরী সহ সিলেটের সব জায়গাই মানুষের শ্রবণশক্তির তুলনায় বেশি শব্দ দুষণ হচ্ছে যেটা ঝুকিপূর্ণ।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) ট্রাফিকের (অতিরিক্ত) উপ-কমিশনার (ডিসি-প্রসিকিউশন) বি.এম. আশরাফ উল্যাহ তাহেরের বক্তব্যের জন্য মুঠো ফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: বদরুল হুদা দৈনিক জাগ্রত সিলেটকে বলেন, শব্দ দুষণ যাতে কম হয় এ নিয়ে আমরা বিভিন্ন ওয়ার্কশপ করে সচেতনতা তৈরি করি এ ছাড়াও বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান আছে। বিশেষ করে শব্দ দুষণ থেকে মুক্তি পেতে আমাদের মধ্যে বেশি করে সচেতনতা প্রয়োজন।
Leave a Reply