হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে রাজাকারের নামে নামকরণকৃত সড়কের নাম পরবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিরামচর গ্রামবাসীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সৈয়দ মোস্তাক আহমেদ রাসেল।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের শায়েস্তাগঞ্জ ইউপি শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে তালিকাভুক্ত রাজাকার সৈয়দ আব্দুল আওয়ালের নামে জেলার অন্তর্গত শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার বিরামচর এলাকায় ২টি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। যা ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তে অর্জিত স্বাধীন বাংলার অবমূল্যায়ন। মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদেরকে অসম্মান করার সামিল। বিরামচর গ্রামবাসীর পক্ষে এ বিষয়ে গত ৩১ মার্চ জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান এবং ২৩ এপ্রিল শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা অফিসের সামনে মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসীকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হলেও অদ্যাবদি রাজাকারের নামকরণকৃত রাস্তার নাম বাতিলের কোনো বাস্তবায়ন দেখতে না পেয়ে আমরা গ্রামবাসী হতাশ। এমতাবস্থায় স্বাধীন এই দেশে বিরামচর এলাকার রাস্তা ২টি থেকে রাজাকারের নাম বাতিল করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান বিরামচরবাসী।
লিখিত বক্তব্যে আরো উল্লেখ করা হয়, ১৩২৭৩নং ওয়াকফ-এ পাবলিক এস্টেট এর প্রায় দুইশ বিঘা জমি রাজাকার সৈয়দ আব্দুল আওয়াল এবং তার সন্তানেরা বিভিন্ন মানুষের নিকট বিক্রি করে দিয়েছে। ওয়াকফ কার্যালয়ে এই ওয়াকফ এস্টেটটি আব্দুস সমদ ওয়াক্ত এস্টেট নামে পরিচিত। অথচ হবিগঞ্জ জেলার অন্তর্গত এই ওয়াক্ত এস্টেট এর সকল জমি একটি জমিদারী এস্টেট ছিল। যার সর্বশেষ জমিদার ছিলেন সৈয়দ দাইম। যাকে এলাকাবাসী সৈয়দ দান মিয়া সাহেব নামে ডাকতেন। সৈয়দ দাইম এর জমিদারী এস্টেট কিভাবে আব্দুস সমদ ওয়াকফ এস্টেটে পরিণত হলো এটা বোধগম্য নয়। সৈয়দ দাইম ছিলেন হযরত সৈয়দ মধু মিয়া সাহেব (রঃ) এর নাতি। উক্ত এস্টেট এর অবিক্রিত হিসেবে বেঁচে আছে মাত্র সৈয়দ মধু মিয়া সাহেব (রঃ) এর মাজার শরীফ এবং আমাদের পারিবারিক কবরস্থান। আত্মীয়তার সূত্রে রাজাকার সৈয়দ আব্দুল আওয়ালের পরিবারবর্গকে এই মাজারে কবর দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কয়েক বছর আগে রাজাকারপুত্ররা মাজারের সামনে একটি গেট নির্মাণ করে এবং উক্ত গেটে লেখা দেওয়া হয়েছে সৈয়দ আব্দুল আওয়ালের পারিবারিক কবরস্থান। উক্ত মাজার শরীফ ১৩৬ শতক ভূমি নিয়ে অবস্থিত। মাজারের জমি দখল করার জন্য রাজাকারপুত্ররা বর্তমানে পাঁয়তারা করছে।
সংবাদ সম্মেলনে ১৩২৭৩নং ওয়াকফ পাবলিক এস্টেট এর সমস্ত জমি পুনরুদ্ধার এবং অবৈধভাবে ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রির অপরাধে রাজাকারপুত্র সৈয়দ ইলিয়াস, আক্কাছ, আব্বাছ এবং আফজালকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদানের দাবি জানানো হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দ ইলিয়াস বলেন, আমরা আমাদের ওয়াকফ এস্টেটের নিজস্ব জায়গা বিক্রি করেছি। যার সকল কাগজপত্র আমাদের রয়েছে। আর আমার বাবার নামে সড়ক নির্মাণের বিষয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই।
Leave a Reply