গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি :: চিকিৎসাসেবা সহজতর ও জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনসাধারণের মাঝে সেবা দিতে প্রথমবারের মতো সিজারিয়ান অপারেশনের (ওটি) মাধ্যমে সন্তান প্রসব ইউনিট চালু করা হয়েছে। শহরে বিদ্যমান এ চিকিৎসাসেবা উপজেলা পর্যায়ে শুরু হওয়াতে স্থানীয়দের মাঝে খুশির আমেজ দেখা দিয়েছে।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এক অন্তঃসত্ত্বার সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে এ সেবাটি চালু করা হয়। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মপরিকল্পনায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশলয় সাহার সার্বিক দিকনির্দেশনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৪৫ বছর শেষে সোমবার প্রথমবারের মতো সিজারের মাধ্যমে ফুটফুটে একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন এক প্রসূতি মা। বর্তমানে মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ আছেন।
স্থানীয়রা জানান, কোনো অন্তঃসত্ত্বা মায়ের অবস্থার অবনতি হলে দূরের পথ সিলেট যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। সিজারিয়ান অপারেশন না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে উপজেলাবাসীকে। সরকারি সেবার জন্য এসময় উপজেলাবাসীকে বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক কিংবা সরকারি বড় হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন করাতে হতো। এতে অতিরিক্ত টাকা খরচ হতো, অনেকের সে সামর্থ্য ছিল না। বর্তমানে হাতের নাগালে এ চিকিৎসাব্যবস্থা চালু করায় কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই সিজারিয়ান সেবা পাওয়া যাবে।
প্রথম সিজারিয়ান অপারেশন সম্পন্ন করেন হাসপাতালের গাইনি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সাবিনা। তাঁর সাথে একই বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডা. নাজমা, কনসালট্যান্ট এনেস্থিসিয়া ডা. মামুন এবং নার্সিং সুপারভাইজার, ইনচার্জসহ সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দের সমন্বয়ে চলে সিজারিয়ান অপারেশন।
গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচও ডা. কিশলয় সাহা জানান, উপজেলা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৪৫ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথম সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব ইউনিটের মাধ্যমে নতুন আরেকটি চিকিৎসাসেবা চালু করা হয়েছে। যা এতদিন আমার কাছে স্বপ্ন ছিল তা বাস্তবায়ন করতে পেরে সত্যি আমার অনেক ভালো লাগছে যা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। এই ইউনিট চালু করতে আমার ঊর্ধ্বতন বিভাগের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদ এমপি, আমার সহকর্মী সকল ডাক্তার এবং নার্সিং সুপারভাইজার, ইনচার্জসহ সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি। সকলের সার্বিক সহযোগিতায় গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন চিকিৎসাসেবা সংযুক্ত হবে এবং এ থেকে উপজেলাবাসী উপকৃত হবেন।
গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সরকার জনগণের চিকিৎসাসেবায় আন্তরিক ও সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করে আসছে। সরকারের সেই ধারাবাহিকতার অংশের আওতায় গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব ইউনিট চালু হওয়া। ভবিষ্যতে গোয়াইনঘাটের মানুষের চিকিৎসাসেবা আরও সহজতর জনগণের দোরগোড়ায় রাখতে সরকারের সব ধরনের ব্যবস্থা প্রসারিত করা হবে।
Leave a Reply