হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। কয়েকদিন টানা বৃষ্টিপাত না হওয়াতে কুশিয়ারা ও কালনী নদীর পানি কমেছে। তবে হাওর এলাকায় পানি এখনো বেশি। এতে করে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ চরমে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাঝে চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু শিশু ও গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা সুমি রাণী বল জানান, এ পর্যন্ত ১৯৯ মেট্রিকটন চাল ও ৪১৫ প্যাকেট শুকনো খাবার বন্যার্তদের মাঝে দেওয়া হয়েছে। শিশু ও গো খাদ্যের জন্য চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে।
তবে বানভাসি মানুষ বলেন, চারদিকে পানি থইথই করছে, শুধু চাল দিয়ে কি করব, কিভাবে রান্না করব, শুধু চাল দিয়ে কিভাবে পেট ভরে। আমাদের শিশুদের খাবার প্রয়োজন, গো-খাদ্যের প্রয়োজন। কিভাবে বাড়িঘর মেরামত করব এই চিন্তায় ঘুম আসে না।
বন্যার পানিতে অনেকের কাঁচা ঘরবাড়ি মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে। বিশেষ করে জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ, আউশকান্দি ও দীগলবাগ ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দি। অপরদিকে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছ ইউনিয়নে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। দুটি উপজেলায় ৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে মোট ৩২৫টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে নবীগঞ্জ উপজেলায় ২৯৭টি এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলার খাদ্য গুদামে আছে ২৮টি পরিবার। বাহুবল উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের ৪টি ওয়ার্ডের মানুষ এখনো পানিবন্দি। করাঙ্গী নদীর বাঁধ ভেঙে এসব এলাকা প্লাবিত হয়।
ইনাতগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া বশির মিয়া বলেন, ছোট ছোট শিশুদের খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। তাছাড়া আমার ২টি গরু আছে, পানির মধ্যে গরু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। চারদিকে পানি ছাড়া কোথাও কোনো ঘাস নেই।
আবিদা খাতুন বলেন, সরকার আমাদেরকে চাল দিছে, কিন্তু এই চাল আমরা কিভাবে রান্না করব। ছোট্র দুটি বাচ্চা আছে আমার, এদেরকে কি খেতে দিব?
নবীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. তাজউদ্দিন জানান, ইতিমধ্যে বন্যাদুর্গত এলাকায় বিভাগীয় কমিশনারসহ বিভিন্ন কর্মকর্তাগণ পরিদর্শন করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহায়তা প্রদান করা হবে। তাছাড়া জরুরি কিছু খাদ্যপণ্যের চাহিদা দেওয়া হয়েছে।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল ভৌমিক জানান, খাদ্য গুদামে আশ্রয় নেওয়া ২৮টি পরিবারের মধ্যে ২৫ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া শিশু ও গো-খাদ্যের চাহিদা দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply