শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২১ পূর্বাহ্ন

নোটিশ :
সিলেট বিভাগসহ দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা সদরে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আগ্রহীরা আমাদের পত্রিকার ইমেইল ঠিকানায় পূর্নাঙ্গ জীবন বৃত্তান্ত প্রেরণের আহবান জানানো যাচ্ছে। এছাড়া প্রবাসের বিভিন্ন দেশে আমরা প্রতিনিধি নিয়োগ দিচ্ছি।
শিরোনাম :
এইচএসসির তিন পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে: প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা জাফর ইকবালকে শাবিপ্রবিতে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা শিক্ষার্থীদের সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকাভুক্ত সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ বাংলাদেশ সরকারের উচিত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার নিশ্চিত করা: জাতিসংঘ কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবি প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনায়: কাদের কুরিয়ার সার্ভিস থেকে গ্রাহকের ২২ লক্ষ টাকা গায়েব, আটক ২ জঙ্গি, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে এসএমপি কমিশনারের হুঁশিয়ারি হবিগঞ্জে টাকা না দেওয়ায় পুলিশি প্রতিবেদনে আসামি শিশু নগরীতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ধাওয়ায় ছত্রভঙ্গ আন্দোলনকারীরা নগরীতে চুরি, নগদ টাকা ও স্বর্ণ লুট শায়েস্তাগঞ্জে রাজাকারের নামে সড়ক বাতিলের দাবি গোয়াইনঘাটে সিজারিয়ান অপারেশনের সূচনা কোটা সংস্কারের আন্দোলন, দেশব্যাপী সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত কমতে শুরু করেছে পানি, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি তাহিরপুরে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৬ কিলোমিটার সড়ক, চলাচলে ভোগান্তি এক মাস অপেক্ষা করেন, প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যাবো- আন্দোলনকারীদের প্রতি ব্যারিস্টার সুমন হবিগঞ্জ পলিটেকনিকে কোটাবিরোধী বিক্ষোভ ৬৫ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ গ্রেপ্তার ১ মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দেখাতে হবে: প্রধানমন্ত্রী দোয়ারাবাজারে কিশোরের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার জগন্নাথপুরে বন্যার পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা এমদাদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কমলগঞ্জে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির সম্পন্ন হবিগঞ্জে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী দিবস পালিত ফের কারাগারে কাউন্সিলর নিপু জুলাইজুড়ে বৃষ্টি নিয়ে দুঃসংবাদ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি অব্যাহত চীন বাংলাদেশকে দুই বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেবে: প্রধানমন্ত্রী
হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ
নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি কাজ

হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ
নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি কাজ

 

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: জানতে চাইলেই সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে উত্তর পাওয়া যায়, ‘এই তো শেষ। আরেকটু শুধু বাকি। দ্রুত কাজ চলছে… এই হয়ে গেছে।’ কিন্তু শেষ আর হয় না। এভাবেই চলছে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও ছাতকের কয়েকটি প্রকল্পের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী গত বুধবার হাওরাঞ্চলের ফসল রক্ষা বাঁধের নির্মাণ ও সংস্কারকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। শনিবার বিকেল পর্যন্ত সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার পৃথক দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে মাটি ফেলার কাজই শেষ হয়নি। এখন পর্যন্ত দুই উপজেলায় বাকি রয়েছে ৮ শতাংশ কাজ। এ নিয়ে হাওরের কৃষক আগাম বন্যায় ফসলহানির শঙ্কা প্রকাশ করছেন। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেরিতে কাজ শুরু হওয়া ও গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে কাজ শেষ করা যায়নি।

 

গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু ও চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ধর্মপাশা ও মধ্যনগরে তৃতীয় সপ্তাহে পিআইসি গঠন করা হয়। এতে কাজ শুরু করতেই দেরি হয়ে যায়। পাউবোর অধীনে এবার ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার চন্দ্রসোনার থাল, ধানকুনিয়া, জয়ধনা, কাইল্যানি, সোনামড়ল, রুই বিল, গোড়াডোবা, গুরমা ও গুরমার বর্ধিতাংশ হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ হচ্ছে। ধর্মপাশায় এবার মোট ৯৬টি প্রকল্পে বাঁধের কাজ চলমান।

 

দুই উপজেলার দায়িত্বে থাকা পাউবোর দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বলছেন, শনিবার বিকেল পর্যন্ত ৯২ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ধর্মপাশার চন্দ্রসোনার থাল হাওরের ৫২ নম্বর প্রকল্পের শয়তানখালী ক্লোজারে শনিবার পর্যন্ত মাটি ফেলার কাজ শেষ হয়নি। ৪৫টি প্রকল্পে ঘাস লাগানো শেষ হয়েছে। অন্যগুলোতে ঘাস লাগানো অব্যাহত রয়েছে।

 

মধ্যনগরের ৩২টি প্রকল্পের মধ্যে মাত্র সাতটিতে ঘাস লাগানো হয়েছে। এ উপজেলার গুরমার হাওরে ২৬ নম্বর প্রকল্পে শনিবার বিকেল পর্যন্ত মাটি ফেলার কাজ শেষ হয়নি।

 

চন্দ্রসোনার থাল হাওরের ৫২ নম্বর প্রকল্পের সদস্য সচিব শাহীন আলম জানান, ১৩২ মিটার প্রকল্পের মধ্যে একটি বড় ক্লোজার রয়েছে। ফলে সময় নিয়ে এর কাজ করতে হচ্ছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কাজ গুরুতরভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।
সোনামড়ল হাওরের কৃষক জাকিবুর মিয়া জানান, কোনো বছরই সময়মতো কাজ শেষ হয় না। ফলে ফসল নিয়ে আমাদের চিন্তায় থাকতে হয়।

 

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের মধ্যনগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন জানান, কাজ শুরুই হয় দেরি করে। ফলে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে না– এটাই স্বাভাবিক। এছাড়া সময়মতো অর্থ ছাড় না দেওয়ায় কাজ বাধাগ্রস্ত হয়।

 

মধ্যনগর উপজেলার দায়িত্বে থাকা সুনামগঞ্জ পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী নূর আলম জানান, এখন পর্যন্ত ৯২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ হবে।

 

মধ্যনগর উপজেলার ইউএনও অতীশ দর্শী চাকমা জানান, বৃষ্টির কারণে কাজ শেষ করা যায়নি। দ্রুতই কাজ শেষ হবে।
এদিকে ছাতকেও একই পরিস্থিতি। চলতি মেয়াদের ৩২টি প্রকল্পের কাজ এখনও শেষ হয়নি। যেটুকু কাজ হয়েছে, ওই কাজ নিয়েও পিআইসিগুলো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দায়সারাভাবে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। যার ফলে টেকসই বাঁধ তৈরি নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

 

শনিবার বিকেল পর্যন্ত পুরো উপজেলায় প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে পাউবো। তবে স্থানীয়রা বলছেন, কাজ হয়েছে ৭৫ শতাংশ। এসব কাজ পুরোপুরি দৃশ্যমান হলেও বাঁধের কাজ সন্তোষজনক নয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার ৩২টি প্রকল্পের অধীনে নোয়ারাই, জাউয়াবাজার, চরমহল্লা, দক্ষিণ খুরমা, উত্তর খুরমা ও সিংচাপইড় ইউনিয়নে বাঁধের কাজ চলমান। নানা জটিলতায় পিআইসি গঠনে বিলম্ব হয়। যার কারণে শেষ হয়, হচ্ছে করেও এই উপজেলার প্রকল্পগুলোর কাজ যথাসময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি।

 

নোয়ারাই ইউনিয়নের নাইন্দার হাওরের ফসলরক্ষায় বেশিরভাগ স্থানে মাটি ভরাট কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এখন চলছে বাঁধে ঘাস লাগানোর কাজ। তবে ওইসব বাঁধের কাজের দায়িত্বে থাকা কাউকে পাওয়া যায়নি প্রকল্পের স্থানে।

 

ছাতকের ১৯ নম্বর পিআইসির মির্জাখাল ক্লোজারটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। নাইন্দার হাওরে ছাতক ও দোয়ারাবাজার এলাকার অসংখ্য কৃষকের বোরো ফসল রয়েছে। স্থানীয় কৃষক জমির মিয়া জানান, এখানে বাঁধ মেরামতে দায়সারাভাবে কাজ হয়েছে। পুরোনো বাঁধের ওপর কোনোমতে মাটি মিলিয়ে কাজ করা হয়েছে। ২৩ নম্বর রাউলি পিআইসির ক্লোজারটির ঘাস লাগানো ও বস্তা ফেলার কাজ চলছে। জাউয়াবাজার ইউনিয়নের কুড়িবিল ক্লোজারটির কাজও চলমান।

 

৬ নম্বর পিআইসির চানপুর ক্লোজারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এছাড়া ৩, ১১, ২৯ ও ৩১ নম্বর প্রকল্পের বাঁধে ঘাস লাগানোর কাজ শেষ হয়নি।

 

জাউয়াবাজার ইউনিয়নের চাউলির হাওর এলাকার কৃষক ইসলাম উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, বাঁধের কাজ সন্তোষজনক নয়।

 

এদিকে ৭ নম্বর পিআইসির সভাপতি মমস্বর আলী জানান, বাঁধ মেরামতের কাজ প্রায় ৮৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। মাটি ভরাট শেষে ড্রেসিংয়ের কাজ করা হচ্ছে। আর্থিক সংকটের কারণে বাঁধের কাজ চলছে ধীরগতিতে।

 

প্রকল্পের সভাপতি আলাল উদ্দিন ও সদস্য সচিব নূর মিয়া বলেন, চরমহল্লা ইউনিয়নের আওতাধীন ডেকার হাওরের কচুরবাড়ী ব্রিজের মুখে প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে।

 

হাওর বাঁচাও আন্দেলন, ছাতক কমিটির নেতারা জানান, সরকার দলের সমর্থক ও পছন্দের কৃষকরা কাজ পেয়ে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই বাঁধের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে টেকসই বাঁধ মেরামত কাজ নিয়ে উপজেলার অনেক কৃষকই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

 

পাউবো আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তা এমদাদুল হক জানান, ২৪টি প্রকল্পের মাটি ফেলার কাজ শেষ হয়েছে। সার্বিক কাজের ৯০ ভাগ সম্পন্ন। এখন পর্যায়ক্রমে ফিনিশিং, ডাম্পিং ও ড্রেসিংয়ের কাজ চলছে। ইউএনও গোলাম মোস্তফা মুন্না জানান, প্রকল্পের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন মনিটরিং কমিটির পক্ষ থেকে নিয়মিত কাজ মনিটর করা হচ্ছে।

 

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017
Design BY Web Nest BD
ThemesBazar-Jowfhowo